নকশিকাঁথা লোকশিল্পের একটি প্রাচীনতম অনুসঙ্গ। বহুপ্রাচীনকাল থেকে নকশিকাঁথা এদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক উপাদান হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। আমাদের প্রকৃতি পরিবেশ তথা গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন যাপনের উপযোগিতার নিরিখে এদেশের মেয়েদের অনুভব ও চেতনায় নকশিকাঁথা বিধৃত হয়েছে। এ জন্য এর প্রাচীনত্ব সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় নি। তবে ময়মনসিংহ গীতিকায় কবি চন্দ্রাবতীর রামায়ণ কাব্যে নকশিকাঁথার উদ্ধৃতি এভাবে পাওয়া যায়।
সীতার গুণের কথা কি কহিব আর
কন্থায় আঁকিল কন্যা চান সুরুয, পাহাড়
আরো যে, আঁকিল কন্যা হাঁসা আর হাঁসি।
চাইরো পারে তাকে কন্যা পুষ্প রাশি রাশি’॥
নকশিকাঁথা বাংলাদেশের লোকজীবনের তথা লোক-সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান হিসেবে আজও টিকে আছে। এটি বাংলার প্রাচীনতম লোক ঐতিহ্য। সূচিশিল্পের এ ঐতিহ্য অন্তত তিন হাজার বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হয়। হৃদয়ের গভীরে লালিত সৌন্দর্য প্রিয়তাকে শৈল্পিকভাবে উপস্থাপনের মধ্যদিয়েই নকশিকাঁথা শিল্পের যাত্রা শুরু হয়।